বসুন্ধরের মর্ত্যলোকে জন্মগ্রহন বৃত্তান্ত টি সংক্ষেপে বিবৃত করো
প্রশ্নের মান - ৫/৬
প্রশ্ন : বসুন্ধরের মর্ত্যলোকে জন্মগ্রহন বৃত্তান্ত টি সংক্ষেপে বিবৃত করো ।
উত্তর:- মধ্যযুগের শেষ কবি ভারতচন্দ্র রায়গুনাকরের অভিনব সৃষ্টি " অন্নদামঙ্গল " কাব্য । এই কাব্যের অন্যতম অধ্যায় আমাদের আলোচ্য " বসুন্ধরের মর্ত্যলোকে " জন্ম ।
[ ] কুবেরের অনুচর বসুন্ধর ও বসুন্ধরার অন্নদার শাপে মর্ত্যে জন্ম গ্রহন নিশ্চিত হয় । এই বসুন্ধরই পরবর্তী কালে দেবীর কৃপায় পদ্মিনীর গর্ভে জন্ম গ্রহন করেন । সন্তান অর্থাৎ বসুন্ধরের জন্মের পূর্বে দুঃখে দারিদ্র্য পদ্মিনীর যে মূর্তি কবি অঙ্কন করেছেন তা নিম্নরূপ
তৈল বিনা চুলে জটা খড়ি উড়ে পায় ।।
লতা বাঞ্চ পদ্ম পাতে কটি আচ্ছাদন ।
ঢাকিয়াছে পদ্ম পাতে মাথা আর স্তন ।।
তার স্বামী জাতিতে মৌলিক কায়স্থ হলেও কপাল গুনে তাকে ঘুঁটে বিক্রয়ের জীবিকা নিতে হয়েছে । তাতে সংসার চালানোই দায় । পদ্মিনী তার ব্যার্থ নারী জীবনের বেদনাকে তাই দেবীর কাছে ভোরে প্রকাশ করেছে - " এমন দুঃখিনী আমি কে ডাকে / সুশীল আমার বাতাসে নাহি থাকে ।" দেবী তখন পদ্মিনীর এই দুঃখ সহ্য করতে না পেরে বসুন্ধরকে তার গর্ভে জন্মানো স্থির করেন । দেবী বলেছেন -
" আমার আশিসে তুমি পূত্রবতী হবে ।
সে পুত্র হতে তুমি বড় সুখে রবে ।।
ধন ধান্য পরিপূর্ন হইবেক ঘর ।
কুলীন কায়স্থ সব দিবে কন্যা বর ।।"
দেবী মায়াময় শ্রীফলের ফুল দিয়ে তাতে বিজরুপে বসুন্ধর রাখলেন এবং পদ্মিনীকে কানে কানে বললেন -
" ঋতু স্নান দিনে ইহা বাটিয়া খাইবে ।।"
এরপর পদ্মিনী নিদিষ্ট দিনে স্নান করে সেই ফুল বেটে খায় এবং গর্ভবতী হয় । দশমাস পূর্ন হলে
" গর্ভ বেদনায় হইল পদ্মিনী কাতর ।
দ্রুত হয়ে বসুন্ধর ধরে বসুন্ধরা ।।"
কিন্তু দুঃখের এমন পরিস্থিতি যে পদ্মিনীকে নিজেই নাভিচ্ছেদ করতে হয় এবং চরম দুঃখে তার নিজের পুত্রের নাম রাখা হয় " হরি " । এইভাবে বসুন্ধর মর্ত্যে জন্ম গ্রহন করে ।
কোন মন্তব্য নেই