বীরাঙ্গনা কাব্যের মূল প্রেরণা হিসেবে কোন বিদেশী কাব্যের নাম উল্লেখ করা যায় ? সেই প্রেরণা দানকারী কাব্যের সঙ্গে কী কী সাদৃশ্য আছে লেখো ?
প্রশ্নের মান - ৫/৬
প্রশ্ন : " বীরাঙ্গনা " কাব্যের মূল প্রেরণা হিসেবে কোন বিদেশী কাব্যের নাম উল্লেখ করা যায় ? সেই প্রেরণা দানকারী কাব্যের সঙ্গে কী কী সাদৃশ্য আছে লেখো ?
উত্তর:- ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সজনীকান্ত দাসের সম্পাদনায় " বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ " থেকে " বীরাঙ্গনা"র যে সংস্করণ বেরিয়েছে তাতে সম্পাদকদ্বয় " বীরাঙ্গনা " কাব্যের পশ্চাতে একটি কারণ আবিষ্কার করেছেন । একদিকে অমিত্রাক্ষর ছন্দ সম্পর্কে নবতর সাফল্য প্রদর্শন , অপরদিকে একটি নাটকীয় বিষয়কে অবলম্বন এই দুটি কারণে কবি ( Ovid Publious Ovidius Noso 43 B.C 17 A.D ) ওভিদের কাব্যগ্রন্থ " The Heroides Of Epistle Of The Heroines " গ্রন্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে " বীরাঙ্গনা " কাব্য লিখেছেন ।
[ ] মাইকেল মধুসূদন দত্ত যে ওভিদের কাব্য গ্রন্থ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন , সম্ভবত সেই কথা সর্ব প্রথম উচ্চারণ করেন মাইকেলেরই জীবনীকার যোগিন্দ্রনাথ বসু মহাশয় । তারপর " মধুস্মৃতি " গ্রন্থের লেখক নগেন্দ্রনাথ সোমও একই কথার জেরে টানেন ।
[ ] উভয় গ্রন্থকেই পত্রকাব্য বলা হয়েছে এবং পত্র সংখ্যা যথাক্রমে ওভিদ ২১ টি , মধুসূদন ১১ টি । ওভিদের চারটি পত্রিকার সঙ্গে বীরাঙ্গনার সরাসরি যোগ লক্ষ্য করার মতো । ফিদ্রা , ডিডো , ক্যানেস ও অ্যারিয়ডনী র পত্রাবলি । এছাড়াও উভয়েই পৌরাণিক কাহিনী থেকে গল্প সংগ্রহ করেছেন । আর ছন্দগত সাদৃশ্য একেবারে অঙ্গাঙ্গী যুক্ত । যদিও একথা সহজেই বলা যায় মধুসূদন ছিলেন মধুকর আর তাই কোন একের প্রভাবে তিনি যে প্রভাবিত নন তা তার কথায় স্পষ্ট । মধু ভান্ডার সঞ্চয়ের মতো বিভিন্ন দেশের কাব্য সাহিত্যর চমক প্রদ উপকরন গুলী সংগ্রহ করে এনে যে কাব্য তিনি রচনা করেন তা নিরবধি কাল গৌরজন গান করে তৃপ্ত হবে । ওভিদের সঙ্গে মধুসূদনের কিছু পার্থক্য আছে ওভিদের ভাষা বড়ো বেশি আলংকারিক । তাই নাগরিকগণ যেন প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেননি । ওভিদের কাব্য ইউরোপীয় ভোগবাদ ও ঐহিকতা প্রাধান্য পেয়েছে । বীরাঙ্গনায় সেখানে রেনেসাঁসের ফলজাত আদর্শবাদ , নীতিবাদ , সংযম , গৃহ ধর্ম বড়ো হয়ে উঠেছে ।
কোন মন্তব্য নেই