বীরাঙ্গনা কাব্যটি কবি কাকে উৎসর্গ করেছিলেন ? কাব্য সৃষ্টি এবং উৎসর্গের মূলে কোনো কারণ আছে কি ? যদি থাকে তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
প্রশ্ন : " বীরাঙ্গনা " কাব্যটি কবি কাকে উৎসর্গ করেছিলেন ? কাব্য সৃষ্টি এবং উৎসর্গের মূলে কোনো কারণ আছে কি ? যদি থাকে তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তর:- " বীরাঙ্গনা " কাব্যটি কবি শ্রীমধুসূদন দত্ত তৎকালীন নারী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের উদ্দেশ্য উৎসর্গ করেছিলেন ।
[ ] কাব্য জগতে নতুন নতুন রসের উৎপাদক শ্রীমধুসূদন ভিন্নতায় বিশ্বাসী । তিনি প্রথম বাংলা কাব্য জগতে যেমন অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার শুরু করেছিলেন ঠিক তেমনি ভাবে পত্র কাব্য হিসাবে " বীরাঙ্গনা " কাব্য সৃষ্টি করেছেন । যার অন্যতম কারণ হল নতুনত্বের স্বাদ । বীরাঙ্গনা বাংলা কাব্য জগতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে । আবার অনেকে মনে করেন পাশ্চাত্য প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে মধুসূদন দত্ত বীরাঙ্গনা কাব্য রচনা করেছেন । ইতালীয়ান কবি Ovid এর Heroides এর প্রভাব ও অন্যান্য কাব্যের প্রভাব বীরাঙ্গনায় পরিলক্ষিত হয় । আর উৎসর্গের ব্যাপারে তার সমকালীন নারীদের তথা নায়িকাদের সহমর্মী বিদ্যাসাগর ছাড়া আর কে আছে ? আর তাই উৎসর্গ পত্রটিও একেবারে সঠিক ।
[ ] বীরাঙ্গনা কাব্যে মধূসুদন নারীর আত্মসচেতনা বোধ , ব্যাক্তি বোধ ও নারীত্ব চেতনাকে সম্মান জানিয়েছেন । তার কাব্যের নায়িকারা ব্যাক্তিগত ইচ্ছা , অনিচ্ছা ছাড়া অন্য কোন কিছুর মূল্য স্বীকার করেননি । উনিশ শতকের নবজাগরণের আলোকে উদ্দীপিত মধুসূদনের " বীরাঙ্গনা " কাব্য নায়িকাকুল । বিদ্যাসার নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ । স্ত্রী শিক্ষা বিস্তার , বিধবা বিবাহ প্রচলন ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অসামান্য । তাই ব্যাক্তিগত ঋণ নয় , একটি আদর্শ বোধের তাগিদ থেকেই মধুসূদন " বীরাঙ্গনা " কাব্যটি বিদ্যাসাগরের করকমলে উৎসর্গ করেছিলেন ।
কোন মন্তব্য নেই