ভারত বর্ষের কোন প্রদেশেই বাংলার মতন রক্তের মিশ্রণ হয়নি । উদ্ধতিটি কার লেখা কোন রচনার অংশ ? রক্তের মিশ্রণ বলতে কি বোঝানো হয়েছে ? উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে বলো প্রশ্নোত্তর
উত্তর:-“ ভারতবর্ষের কোন প্রদেশেই বাংলার মতন.......” উদ্ধতিটি হুমায়ুন কবীরের লেখা “ বাংলা কাব্যের গোড়ার কথা ” প্রবন্ধের অংশ । এখানে রক্তের মিশ্রন বলতে সংস্কৃতির মিশ্রণ কে বোঝানো হয়েছে ।
[ ] আমরা জানি বাঙালি একটা মিশ্রজাতি । মূলত , দ্রাবিড় মঙ্গোলীর জাতির মিশ্রণে বাঙালি জাতি গড়ে ওঠে , এর উপর এসে পড়ে আর্য জাতির প্রভাবও বাঙলার আদিম অধিবাসী যদি মঙ্গোলীয় মানুষেরা হয় , তবে তাদের রক্ত অবিমিশ্র থাকে নি । অতি প্রাচীনকাল থেকে এই মঙ্গোলীয় জাতি আর দ্রাবিড় জাতির মিশ্রণ ঘটেছে । এই মঙ্গোলীয় জাতির মনোবৃত্তি ছিল অহিংস্ত্রতা । বাঙালির আচরণে এ বৈশিষ্ট্য আছে । তবে , দ্রাবিড় জাতি কাছ থেকে বাঙালি কোন বৈশিষ্ট্য লাভ করেছে , তা বোঝা যায় না । লেখক বলেছেন “ হয়তো গোষ্ঠীপ্রীতি ও অলস নিষ্ক্রিয়তা দ্রাবিড় এবং মঙ্গোলীয় রক্তের সংমিশ্রণেরই ফল ।”
[ ] এরপর এসে মিশেছে আর্যরক্ত । তবে বাঙালির মধ্যে আর্যরক্তের অংশ কম । নিসর্গ প্রীতি , সংগ্রামশিলতা , আত্মপ্রত্যয় , লোকাতীতের সন্ধান , শাস্ত্রীয় অনুশাসনে মান্যতা এগুলি আর্য বৈশিষ্ট্য । বাঙলার কাব্যলোকে এই সবের পরিচয় ফুটে ওঠে । এগুলি আর্যরক্তের , অর্থাৎ আর্য সংস্কৃতির দান বলা যায় । তাই বলতেই পারি , কমপক্ষে তিনটি জাতির মিশ্রণে বাঙালী জাতি গড়ে উঠেছে যা , ভারতবর্ষের আরকোনো জাতির ক্ষেত্রে দেখা যায় না ।
কোন মন্তব্য নেই