সাধুচরনের চরিত্রটি কতখানি সার্থকতা লাভ করেছে বিচার করো
প্রশ্ন : সাধুচরনের চরিত্রটি কতখানি সার্থকতা লাভ করেছে বিচার করো ।
উত্তর:- " নীলদর্পণ " নাটকে যে সকল রায়তের ভূমিকা রয়েছে , তাদের মধ্যে একজন সাধুচরণ চরিত্রটি নাট্য গুন সম্পন্ন নয় । নাটকে এর প্রয়োজন ও বিশেষ নেই । গোলক বসুর সে প্রতিবেশী । নিরীহ ভদ্রলোক গোছের মানুষ । নীলকর সাহেবদের অন্যায় অত্যাচার সমন্ধে সে সচেতন কিন্তু নবীন মাধবের মতো প্রতিবাদী নয় । কিঞ্চিৎ লেখা পড়া শিখে আর ভদ্রলোকদের সঙ্গে উঠে বসে সাধুচরণ যথার্থই ভদ্র লোক হয়ে উঠেছিল । ঝুট ঝামেলা তার বাঞ্ছিত নয় । বেশ কয়েকবার তাকে নাটকে দেখা গিয়েছে । তবে রাইচরনের মতো তাকে জীবন্ত লাগেনি । বিশেষত তার সংলাপ সাধু ভাষার ব্যবহারই চরিত্রটিকে নির্জীব করে তুলেছে । কুঠির সাহেবদের সঙ্গে সে যখন কথা বলেছে তখন সাধু ভাষা ব্যাবহার করেছে যেমন ধর্মাবতার নীলের বিরুদ্ধাচরণ করি নাই করিতেছি না এবং করিবার ক্ষমতা নাই ইচ্ছায় করি আর অইচ্ছায় করি নীল করিছি এবারেও করিতে প্রস্তুত আছি । এ রকম সাধুভাষা সাধুর মুখে বেমানান । নাটকের চরিত্র গোপীনাথ বিরক্ত হয়ে বলেছে " সাধু তোর সাধুভাষা রাখ , চাষার মুখে ভাল শুনাই না । " নাট্যকার চরিত্রটির মধ্যে কোনো তেজ দেননি । ক্ষেত্রমনী কে তুলে নিয়ে যাওয়া হলে নবীন মাধব তাকে উদ্ধার করতে ছুটে গেছেন কিন্তু সাধু বাবা হওয়ার সত্বেও যেতে পারেনি । নাট্যকার চরিত্রটির সংলাপের মধ্যে দিয়ে সাহেবদের অত্যাচারের বর্ননা করা ছাড়া আর কিছুই করেননি ।
কোন মন্তব্য নেই