তেলেনাপোতা আবিষ্কার অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
১। তেলেনাপোতা গ্রাম কলকাতা থেকে কত দূরে ? কিভাবে সেখানে যাওয়া যায় ?
উত্তর:- তেলেনাপোতা গ্রাম কলকাতা থেকে 30 - 35 মাইল দূরে । বাসে ঘণ্টা দুই যাবার পর গরুর গাড়িতেও কয়েক ঘন্টা যেতে হয় ।
২। শহরের ছেলেদের তেলেনাপোতা যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য কি ছিল ?
উত্তর:- শহরের ছেলেদের তেলেনাপোতা যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল শহরের ভিড় থেকে মুক্তি নিয়ে ক'দিন বাইরে কাটিয়ে আসা , আর মাছ ধরা ।
৩। শহরের কয়জন যুবক তেলেনাপোতা গিয়েছিল ? তাদের নাম ও স্বভাবের পরিচয় কি ?
উত্তর:- শহরের তিন জন যুবক তেলেনাপোতায় গিয়েছিল । তাদের একজনের নাম মনি । সে পান রসিক । অপর দুজনের নাম জানা যায় না । তাদের একজন ঘুম কাতুরে অন্যজন মৎস্য শিকারের আগ্রহী ।
৪। লেখক তেলেনাপোতা আবিষ্কারের বৃত্তান্ত কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন ? তার শখটা কি ?
উত্তর:- লেখক যাকে উদ্দেশ্য করে বৃত্তান্ত টি বলছেন , তার নাম জানাননি । তবে তার শখ মৎস্য শিকার ।
৫। তেলেনাপোতা আবিষ্কারের জন্য যুবক ত্রয় কোন মাসের কোন সময়ে কিভাবে পথে বের হয় ?
উত্তর:- তেলেনাপোতা আবিষ্কারের এর জন্য যুবক ত্রয় ভাদ্র মাসের অপরাহ্নে অত্যন্ত গরমে ভিড়ে ঠাসা বাসে করে যাত্রা করে ।
৬। বড় রাস্তা থেকে গরুর গাড়িতে তেলেনাপোতা যাওয়ার সময় যুবক ত্রয়ীর অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে জানাও ?
উত্তর:- ছোট্ট সেকেলে গরুর গাড়িতে বেঁকে চুরে , জিনিস পত্র নিয়ে , কোনরকমে তিনজন বসে । গাড়িটা যেন অন্ধকার সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে চলতে থাকে । একসময় গাড়োয়ান কানেস্তারা বাজায় । চিতাবাঘ তাড়াবার জন্য । ক্ষুধার্ত না হলে বাঘ মানুষ খায় না জেনেও তারা আশ্বস্ত হতে পারে না । ভয় বুকে নিয়েই তাদের গাড়ি এক সময় এক ভাঙ্গা অট্টালিকার পাশে এসে থামে ।
৭। " এজ্ঞে ঐ শালার বাঘ খেদাতে ।" কে কাকে , কখন একথা বলে ? কোন বাঘের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর:- " এজ্ঞে ঐ শালার বাঘ খেদাতে ।" একথা তেলেনোপতার গরুর গাড়ির গাড়োয়ান বলেছে । শহরের তিন যুবককে নিয়ে গরুর গাড়িটা রাতের অন্ধকারে চলার সময় গাড়োয়ান কানেস্তারা বাজালে যুবকরা কারণ জানতে চায় । তখন গাড়োয়ান কথাটার সঙ্গে চিতাবাঘের কথা বলেছে ।
৮। " একটা কটু গন্ধ অনেকক্ষণ ধরেই আপনাদের অভ্যর্থনা করছে ।" কোন গল্পের কথা ? আপনাদের বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? কটুগন্ধটা কিসের ?
উত্তর:- " একটা কটু গন্ধ অনেকক্ষণ ধরেই আপনাদের..." তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের কথা । " আপনাদের " বলা হয়েছে হয়েছে শহরের তিন যুবককে যারা তেলেনাপোতা আবিষ্কার করতে গিয়েছিল । কটুগন্ধটা ছিল পুকুরের পানাপচা গন্ধ ।
৯। শহরের যুবক ত্রয় তেলেনাপোতা আবিষ্কার করতে গিয়ে কোথায় আশ্রয় পেয়েছিল ? আশ্রয় স্থানটির পরিচয় দাও ?
উত্তর:- শহরের যুবক ত্রয় " তেলেনাপোতায় গিয়ে আশ্রয় পায় একটা বিশাল অথচ ভগ্ন অট্টালিকার অপেক্ষাকৃত ভালো একটা ঘরে । তার ভাঙা ছাদ , ধ্বসে পড়া দেওয়াল , চক্ষুহীন কোটরের মতো পাল্লাহীন জানালা ।
১০। তেলেনাপোতায় যুবক ত্রয়ীর কিভাবে প্রথম রাত কাটে ?
উত্তর:- ভগ্ন অট্টালিকার একটা ঘরের মেঝেতে শতরঞ্চ বিছিয়ে তিন বন্ধুর একজন ঘুমকাতুরে এমনিতেই নাক ডাকিয়ে ঘুমাতো থাকে , একজন পানরসিক, সে মদ্যপান করে ঘুমায় আর একজন বাড়িটা দেখবার কৌতূহলে ভাঙ্গা সিড়ি দিয়ে ছাদে গিয়ে অন্য একটি ঘরের জানালায় একটি মেয়েকে দেখে এসে মশার কামড় খেতে খেতে ঘুমায় ।
১১। " আপনি বিচক্ষণ হলে দেওয়ালে ওগায়ে বসবার বিশিষ্ট ভঙ্গি দেখে বুঝবেন তারা মশাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো কুলীন " একথা তাৎপর্য কি ?
উত্তর:- " আপনি বিচক্ষণ হলে ...কুলীন " এ কথার তাৎপর্য এই যে , মশারা ম্যালেরিয়া রোগের বাহন অ্যানোফিলিস জাতির তাই ভয়ানক ।
১২।" আপনাদের দুই বন্ধু তখন দুই কারণে অচেতন ।" কার কোন দুই বন্ধুর কথা বলা হয়েছে ? তারা অচেতন কি কারণে ?
উত্তর:-"আপনার দুই বন্ধু .."বলতে কলকাতা থেকে তেলেনাপোতা আবিষ্কার করতে আসা যে যুবক কে উদ্দেশ্য করে লেখক গল্পের বৃত্তান্ত বলেছেন তার দুই বন্ধুর কথা বলা হয়েছে । এই দুই বন্ধুর একজন ঘুম কাতুরে , ঘুমে অচেতন , অন্যজন মদ্যপান করে অচেতন ।
১৩। " আপনার আসল উদ্দেশ্য আপনি নিশ্চয়ই বিস্মৃত হবেন না ।" " আপনার " বলতে কার ? তার আসল উদ্দেশ্য কি ?
উত্তর:- " আপনার আসল উদ্দেশ্য ..." এখানে "আপনার " বলতে শহর থেকে তেলেনাপোতায় আসা সেই যুবককে বোঝানো হয়েছে যাকে উদ্দেশ্য করে লেখক গল্পের বৃত্তান্ত বলেছেন ।
তাঁর আসল উদ্দেশ্য ছিল পুকুরে ছিপ ফেলে মাছ ধরা ।
১৪।" নিথর জলে ঢেউ উঠেছে , আপনার ছিপের ফাতনা মদু মন্দ ভাবে তাতে দুলছে ।" জলে ঢেউ উঠবার কারণ কি ?
উত্তর:- তেলেনাপোতায় আসা তিন যুবকের একজন যখন পুকুরে ছিপ ফেলে মগ্ন হয়ে বসেছিল তখন যামিনী নামের মেয়েটা কলসি দ্বারা পুকুরের জলে ঢেউ দিয়ে জল পরিষ্কার করে জল ভরছিল। ঢেউ সেজন্যই ।
১৫। " বসে আছেন কেন ? টান দিন ।" কে কাকে বলেছে ? কিসের টান দিতে বলেছে ?
উত্তর:-" বসে আছেন কেন ? টান দিন ।"একথা তেলেনাপোতার মেয়ে যামিনী বলেছে কলকাতা থেকে আসা যুবক ত্রয়ীর একজন যে মৎস শিকারী , তাকে । ফাতনা ডুবে যাওয়ায় ছিপে টান দিতে বলেছে ।
১৬। তেলেনাপোতা আসা কলকাতায় যুবকদের মধ্যে কার সঙ্গে যামিনীর সম্পর্ক ছিল ? কেমন সম্পর্ক ছিল ?
উত্তর:- যুবকদের মধ্যে পান বিলাসী মনির সঙ্গে যামিনীর সম্পর্ক ছিল । যামিনী ছিল মনির জ্ঞাতি ভগিনী ।
১৭। " বুড়ি পণ করে বসে আছে , কিছুতেই মরবে না ।" বুড়ি কে ? তাঁর সম্পর্কে এমন কথা বলা হল কেন ?
উত্তর:- বুড়ি হল তেলেনাপোতার যামিনীর মা । বুড়ির হাত পা অকেজো হয়ে পড়েছে । উঠতে পারে না । তবু কন্যা যামিনীর বিবাহের জন্য বড়ো ব্যাকুল । নিরঞ্জন নামের কোনো এক বোনপোর সঙ্গে যামিনীর বিবাহ দিয়েই যেন মরবে । তাই বিরক্ত মনি একথা বলেছে ।
১৮।" এমন ঘুঁটে কুরুনীর মেয়েকে উদ্ধার করতে তার দায় পড়েছে ।" কাকে বলা হয়েছে ঘুঁটে কুরুনির মেয়ে ? কেন তাকে উদ্ধার করার দায় নেয়নি ?
উত্তর:- তেলেনাপতার মেয়ে যামিনী কে বলা হয়েছে ঘুঁটে কুরিনির মেয়ে । কারণ যামিনীর বাবা বেঁচে নেই । মা পঙ্গু হয়ে বেঁচে আছেন , কিন্তু ভয়ানক গরীব । ঘুঁটে কুরুণীর মতোই । নিরঞ্জন নামের এক যুবক যামিনী কে বিবাহ করবে বলেও আসেনি । হয়তো দরিদ্র বলেই ।
১৯।" না মাসিমার , আর পালাবো না ।" বক্তা কে ? সে কাকে মাসিমা , আর পালাবো না বলেছে ? কি উদ্দেশ্যে ?
উত্তর:- " না মাসিমার , আর পালাবো না ।" এ কথার বক্তা শহর থেকে তেলেনাপোতায় আসা মৎস্য শিকার ভিলাশি যুবক । একথা বলার উদ্দেশ্য মুমূর্ষর মতো বৃদ্ধাকে একটু মানসিক শান্তি দেওয়া এবং যামিনীর কাছেও মহত্ত্ব প্রকাশের চেষ্টা বিবাহের ইচ্ছাটা ব্যক্ত করা ।
২০। " তোর শেষ কথা না পেলে আমি মরেও শান্তি পাবো না ।" এই কথার বক্তা কে ? কাকে বলেছে ? বক্তা কোন শেষ কথা শুনতে চেয়েছে ?
উত্তর:-" তোর শেষ কথা না পেলে ..." এ কথার বক্তা যামিনীর বৃদ্ধা মা । তিনি নিরঞ্জন ভেবে কলকাতা থেকে আসা মৎস্যশিকারি যুবককে বলেছেন। বক্তা ঐ যুবকের মুখ থেকে শেষ কথা শুনতে চেয়েছেন সে যামিনী কে বিবাহ করে উদ্ধার করবে ।
২১।" আমি তোমায় কথা দিচ্ছি মাসিমা । আমার কথার নড়চড় হবে না " বক্তা কে ? তার কোন কথার নড়চড় হবে না ?
উত্তর:- " আমি তোমায় কথা দিচ্ছি মাসিমা ..." বক্তা শহর কলকাতা থেকে আসা যুবক তিনজনের একজন যে মৎস শিকারে আগ্রহী । তার যামিনী কে বিয়ে করার কথার নড়চড় হবে না ।
২২। তেলেনাপোতা থেকে ফেরার সময় যামিনী শেষ কথাটি কার উদ্দেশ্যে বলে ? কথাটি কি ছিল ?
উত্তর:- তেলেনাপোতা থেকে ফেরার সময় যামিনী শেষ কথাটি বলেছিল শহর থেকে আসা মৎস শিকারে আগ্রহী যুবকের উদ্দেশ্যে । কথাটি ছিল " আপনার ছিপটিপ যে পড়ে রইল ।"
২৩। কলকাতা যুবকরা তেলেনাপোতা থেকে কখন কিভাবে রওনা হয় ?
উত্তর:- কলকাতার যুবকরা বৈকালে , গরুর গাড়িতে পাকা রাস্তায় এবং সেখান থেকে বাসে কলকাতায় রওনা হয় ।
২৪। কলকাতা যুবকরা তেলেনাপোতায় কদিন অতিবাহিত করে ? তাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা হয় কোথায় ?
উত্তর:- কলকাতা যুবকরা তেলেনাপোতায় মাত্র একদিন ছিল তাও চব্বিশ ঘন্টা পূরণ হয়নি । গভীর রাতে এসে পৌঁছায় এবং পরের দিন সকালে ফেরে । তাদের দুপুরের খাওয়ার ব্যবস্থা করে যামিনী তাদের ঘরে ।
২৫। যামিনীর মা যে ঘরে থাকতেন , ঘর টা কেমন ?
উত্তর:- যামিনীর মায়ের ঘরটায় দোতলায় অন্ধকার । একটা জানালা তাও বন্ধ । বাইরের আলো ঘরে ঢোকে না । তাই দিনের বেলাও থাকে অন্ধকার । পুরো ঘরটা জুড়ে খাট । সেই খাটে মলিন কাঁথা জড়ানো এক কঙ্কালসার শরীর যামিনীর মায়ের ।
কোন মন্তব্য নেই