শৈবলিনীর নরক দর্শন বর্ণনা করো । এই নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন উপায় ছিল ? কে সেই উপায় নির্দেশ করেন ।
উত্তর:- প্রতাপকে ইংরেজদের নৌকা থেকে উদ্ধারের পর নিজের শপথ রক্ষার জন্য শৈবলিনী প্রতাপের সান্নিধ্য ছেড়ে পালায় । অরন্যময় নির্জন পর্বতের গা বেয়ে উঠতে থাকে । ঝড় বৃষ্টিতে , অনাহারে , পথশ্রমে এক সময় তাঁর চেতনা লুপ্ত হয় । তখন তাকে অনুসরন করা রমানন্দ স্বামীর নির্দেশে চন্দ্রশেখর পর্বত শীষের এক গুহায় নিয়ে যান । সেখানে পাথরের উপরে শুইয়ে দেওয়া হয় । চৈতন্যলুপ্ত শৈবলিনী তখন। স্বপ্ন দর্শনের মতোই। নরক দর্শন করে । দেখে তাঁর সামনে একটা অনন্তবিস্তৃত নদী , তাতে জল নেই , কেবল রক্তের স্রোত । তাতে অস্থি , গলিত নরদেহ , নরমুন্ড , কঙ্কাল ভাসছে । তাতে ভয়ঙ্কর সব কুম্ভিরাকৃতি জীব বিচরণ করছে , গলিত শব ধরে খাচ্ছে । সেখানে সূর্য বা চন্দ্রের আলো না থাকেলও সব দেখা যাচ্ছে । এক মহাকায় পুরুষ শৈবলিনীকে সেই নদী সাঁতার দিয়ে পার হতে বললেন । রাজী না হওয়ায় সেই পুরুষ তাকে বেত্রাঘাত করতে উদ্যোত হলেন । সেই বেত ছিল জ্বলন্ত লোহিত লোহার । তার আঘাত সইতে না পেরে শৈবলিনী রুধীর স্রোতে ঝাঁপ দেয় । তখন কুমিররা তাকে মহাকায় পুরুষ উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে অগ্রসর হন । শৈবলিনীর নাকে ভীষন দুর্গন্ধ আর কানে ভয়ঙ্কর শব্দ আসতে থাকে । ভয়ঙ্কর এক কিট তার মুখে ঢুকতে চায় । তখন শৈবলিনী রক্ষা কর , রক্ষা কর , প্রাণ যায় , বলে চিৎকার কর । এই নরক থেকে উদ্ধার পাবার উপায় আছে কি না জানতে চায় ।
[ ] এই নরক থেকে উদ্ধার পাওয়ার উপায় " দ্বাদশবার্ষিক " ব্রত অবলম্বন করা । এই উপায় নির্দেশ করেন মহাকায় পুরুষ । তিনি রমানন্দ স্বামী ।
কোন মন্তব্য নেই