প্রশ্নের মান - ৫/৬
প্রশ্ন: মীরকাসেমের বেগমের নাম কি ? তিনি কোন জাতি ? কোথা থেকে বঙ্গে এসেছিলেন ? তিনি কীভাবে তকি খাঁর হাতে পড়েন এবং কী পরিণতি লাভ করেন ?
উত্তর:- মীরকাসেমের বেগমের নাম দলনী বেগম । তিনি নবাবের সেনাপতি গুরগণ খাঁর ভগিনী , জাতিতে আরমনি , জন্মস্থান ইস্পাহান । ইস্পাহান থেকেই ভাইয়ের সঙ্গে বঙ্গে আসেন ।
[ ] দলনী বেগম মীরকাসেম কে বিবাহ করার পর খুব ভালোবেসে ফেলেন । ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ হলে নবাবের ক্ষতি হতে পারে আশঙ্খায় গোপনে ভ্রাতার কাছে গিয়েছিলেন যুদ্ধ যাতে না বাঁধে সেই চেষ্টা করার কথা বলতে । কিন্তু , গুরগণ নবাব কে ক্ষমতাচ্যুত করে নিজে মসনদে বসবার স্বপ্ন দেখছিলেন । সেই স্বপ্ন পূরণের জন্যই দলনীকে নবাবের অন্তঃপুরে প্রবেশ করান । সেই দলনী শত্রুতা সাধনের সংকল্প করায় গুরগণ স্বার্থের কারণে দলনীকেই প্রসাদে প্রবেশ করা থেকে আটকে দিলেন ।
[ ] অসহায় দলনী আর দাসী কুলসুম কে দেখতে পেয়ে ব্রহ্মচারী চন্দ্রশেখর প্রতাপের গৃহে তাঁদের রাত্রিবাসের ব্যাবস্থা করেন । কিন্তু ইংরেজদের বজরা আক্রমণের অপরাধে প্রতাপ কে ধরতে এসে সাহেবরা দলনীকে ফষ্টর সাহেবের বিবি ভেবে তাকেও ধরে নিয়ে যায় । বেশ কিছুদিন সাহেবদের নৌকায় দলনী আর কুলসুমকে কাটাতে হয় । নবাবের নির্দেশে তকি খাঁ তাকে উদ্ধার করার জন্য অমিয়টের নৌকা আক্রমণ করে । কিন্তু বেগমদের নিরাপত্তার জন্য অমিয়ট তাদের ফষ্টরের বজরায় তুলে দিয়ে কলকাতার দিকে যেতে নির্দেশ দেয় । বজরা মুর্শিদাবাদ ছেড়ে কিছুদূর দক্ষিণে যাওয়ার পর পিছনে একটা পানসি নৌকা দেখে অসুস্থ ভীত ফষ্ঠর ভাবে , বেগমের কারণে নবাবের সেপাইরা বজরার পিছু ধাওয়া করেছে । তাই নিজেকে রক্ষা করতে সে বেগমকেই তীরে নামিয়ে দেয় । কিন্তু সেই নৌকা নবাবের লোকেদের ছিল না । নির্জন নদীতীরে , সন্ধাবেলা।দলনী বেগম পরিত্যক্ত হন । এই অবস্থায় সাক্ষাৎ হয় ব্রহ্মচারী চন্দ্রশেখরের সঙ্গে । গনতকার চন্দ্র জানতেন , দলনীর সঙ্গে নবাবের আর সাক্ষাৎ হবে না । দলনীর মুঙ্গের দর্শন নেই । তবু জেদ করায় ব্রহ্মচারীতকি খাঁর আলয়ে দলনীকে পৌঁছে দেন । কিন্তু তকি খাঁ নবাবকে ইতিমধ্যেই এমন এক পত্র লিখেছেন যে , পত্রের বিষয় সত্য মনে করে নবাব বেগমকে বিষপানে মরতে আদেশ দেন । তকি তাঁকে গ্রহণ করতে চাওয়ায় দলনী তাঁকে পদাঘাত করেন এবং প্রিয়তমের আদেশ মতো বিষপান করে মৃত্যুবরণ করেন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন