তাঁর বাড়ী চিনি , তাঁর ছোট খোকাটিকেও চিনি , কিন্তু তাঁকে এখনও দেখিনি ।কে কার সম্পর্কে এ কথা বলেছে । বক্তার চরিত্রের পরিচয় দাও প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন : " তাঁর বাড়ী চিনি , তাঁর ছোট খোকাটিকেও চিনি , কিন্তু তাঁকে এখনও দেখিনি ।" কে কার সম্পর্কে এ কথা বলেছে ? বক্তার চরিত্রের পরিচয় দাও ।
উত্তর:- " তাঁর বাড়ী চিনি , তাঁর ছোট খোকাটিকেও চিনি ..." কথাটির বক্তা নজরবন্দী যতীন । দেবনাথ ঘোষের সম্পর্কে একথা বলেছে দেবনাথকেই ।
[ ] দেবনাথ তুচ্ছ কারণে জেলে যাবার পর যতীন শিবকালীপুরে আসে । তাকে এ গাঁয়ে অনিরুদ্ধ কামারের বাড়িতে নজর বন্দী করে রাখা হয় । যতীন দেশ প্রেমিক , হৃদয়বান , মানবতা সম্পন্ন , পরোপকারী এক যুবক । শোষিত , পীড়িত মানুষের স্বার্থে আন্দোলন করে , শাসক বিরোধী কথাবার্তা বলে , তাই তার কার্যকলাপে রাজদ্রহিতার গন্ধ পেয়ে সরকার তাকে শহর থেকে গ্রামে এনে এনে নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে । যে মানুষকে ভালোবাসে, মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকতে চায় , সে গ্রামে এসেও তাই ই করবে । যতীনও তাই করেছে । গ্রামের যারা সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য তৎপর , সেই জগন ডাক্তার , দেবু পন্ডিত , হরেন্দ্র ঘোষাল , দ্বারকা চৌধুরী এদের সঙ্গে যতিনের বেশ সু সম্পর্ক গড়ে উঠেছে । অনিরূধের ছন্নছাড়া পরিবারটিকে বাঁচিয়ে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করে । পদ্ম কে মায়ের সম্মান দিয়ে " মামনি " সম্বোধন করে । মানুষের সমস্যায় সত্যপরামর্শ দেয় । যতীন শুধু শিক্ষিত নয় , রুচিবান । তবে গ্রাম্য , রুচিহীন , দরিদ্র মানুষকে সে ঘৃনা করে নি । তাই গ্রামবাসীদের সে আপন জন হয়ে উঠতে পারে । শুধু শ্রীহরি ঘোষ তাকে সহ্য করতে পারেনি । কারণ শ্রীহরি যাদের জব্দ করে গ্রামের একচ্ছত্র ক্ষমতাবান হতে চেয়েছিল , যতীন তাদেরই সঙ্গে যোগ দিয়েছিল । তার পরামর্শে বিরোধী দল শক্তিশালী হচ্ছে , আন্দাজ করেই উপর ওয়ালাদের বলে কয়ে শ্রীহরি এ গ্রাম থেকে যতীন কে সরাবার চেষ্টা করে । তাই , অসহায় পদ্ম মামনিকে ছেড়ে গ্রাম বাসীদের ছেড়ে তাকে চলে যেতে হয় । রবীন্দ্রভক্ত যতীন মনে শক্তি পাবার জন্য রবীন্দ্র কবিতা আবৃত্তি করত । যাবার দিনেও মনে বেদনা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করতে করতে চলে যায় ।
কোন মন্তব্য নেই