নরেন্দ্রনাথ মিত্রের “ রস ” গল্পের মাজু খাতুন চরিত্রটি আলোচনা করো । মাজুর প্রথম স্বামীর কীসের ব্যাবসা ছিল প্রশ্নোত্তর
উত্তর:- নরেন্দ্রনাথ মিত্রের “ রস ” গল্পের যে চরিত্রটি পাঠকের সামনে সবটুকু সহানুভূতি দাবি করে সে মাজু খাতুন । তার জীবনটাই বিড়ম্বনা । গুণবতী মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও সে পছন্দের স্বামীর ঘর করতে পারে না স্বামীর রূপ তৃষ্ণা প্রবল বলে । প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর তার খুবই কষ্টে দিন কাটে । তাকে দ্বিতীয়বার নিকা করে মোতালেফ । মোতালেফ মাজুর থেকে কমবয়সী দেখতে সুন্দর কর্মঠ । তার ঘরে এসে সে মনের মত কাজ পায় গুড় তৈরি করা । এই কাজ সে ছিল দক্ষ । তার তৈরি গুর বাজারের সেরা । বেশি দামে বিক্রি হয় । এটা মোতালেফ জানত বলেই মাজুকে নিকা করেছিল ।
[ ] মাজু বিবি মোতালেফের মত স্বামী পেয়ে পছন্দের কাজ পেয়ে মনে মনে খুবই খুশি হয় । আন্তরিকতায় যত্নে ভালোবাসায় মোতালেফ কে সে ভরিয়ে তুলতে চাই । কিন্তু মোতালেফ তো মাজুকে নিয়ে সংসার করার জন্য তাকে নিকা করেনি । সে তাকে নিকা করে ভালো গুর তৈরি যন্ত্র হিসেবে । ভালো গুর বেশি দামে বেঁচে পছন্দের প্রার্থীকে ঘরে আনবার পণের টাকা জোগাড় করতে । যেদিন সেটা টাকা যোগাড় হলো যেদিন গুড়ের মরশুম শেষ হলো সেদিন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তালাক দিলো মাজুকে । মাজু বিবি বুঝল কত বড় শয়তান সাংঘাতিক ছল চাতুরীর মানুষ তার পছন্দের স্বামীটা ।
[ ] মাজুকে তাড়িয়েই মোতালেফ ঘরে এনেছে ফুলবানুকে । তাদের সুখ যেন আর ধরে না । পরশীদের মুখে এ কথা শুনে মাজু খাতুনের বুকটা জ্বলে ওঠে ঈর্ষায় । তার মনে হয় সে পাগল হয়ে যাবে । এই মনোকষ্ট ঘুচাবার জন্য সে ভাসুরের আনা সম্বন্ধ পঞ্চাশ বছরের বুড়ো নাদির শেখকেই নিকা করে তার সংসারে এসেছে । যে সংসারে রস গুড়েরকোনো বালাই নেয় । পরে একদিন দু ভাঁড় ভালো রস নিয়ে হাজির , সের দুই ভালো গুঁড় মাজুবিবি যদি বানিয়ে দেয় হাঁটে নিয়ে গিয়ে অচেনা খরিদ্দার কে বেচবে । মাজু প্রথমে গাল মন্দ করলেও এই অসহায় , অনুতপ্ত দ্বিতীয় স্বামীকে তাড়িয়ে দিতে পারেনি । এখানেই মাজু খাতুনের চরিত্র জীবন্ত , সার্থক নারী চরিত্র হয়ে উঠেছে ।
মাজুর প্রথম স্বামী রাজেক মৃধা খেজুর রস গুঁড়ের কারবারি ছিল ।
কোন মন্তব্য নেই