রস গল্পের ফুলবানু চরিত্রটি আলোচনা করো । সে প্রথম স্বামীকে ছেড়ে আসে কেন প্রশ্নোত্তর
উত্তর:- নরেন্দ্রনাথ মিত্রের “রস” গল্পের একটি বিশিষ্ট নারী চরিত্র ফুলবানু । সে বেশ রূপবতী ,বয়স উনিশ , স্বাস্থ্যবতীও । সেই জন্যই মোতালেফ তাকে পাবার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে । প্রথম স্বামীর কাছ থেকে তালাক নিয়ে সে বাপের বাড়ীতেই ছিল । বাবা এলেম শেখ এই তালাক প্রাপ্ত মেয়ের জন্যেও পাঁচ কুড়ি টাকা কন্যাপন দাবি করে । মোতালেফ তাতেই রাজি হয় এবং সময় নেয় । ফুলবানুও মোতালেফকে পছন্দ করেছিল সুন্দর চেহারার স্বাস্থ্যবান ও কর্মঠ বলে । তাই কন্যাপনের টাকা না থাকায় হতাশ হয়ে মোতালেফ যখন ফিরে যাছিল তখন ফুলবানু তাকে ডেকে আশা যোগায় । টাকা জোগাড়ের উৎসাহ যোগায় । তবে একথাও বলে যেন আকাশ কুসুম না করে জমি জায়গা না বেঁচে । এতেই বোঝা যায় ফুলবানু যথেষ্ট চালাক চতুর মেয়ে ।
[ ] ফুলবানু সুন্দরী হলেও স্বাস্থ্য সচেতন হলেও মাজুবিবির মতো গুণবতী ও আন্তরিকতা ছিল না । কাজকর্মে নিষ্ঠা ছিলনা । গুড় তৈরির ব্যাপারে তার কোন দক্ষতা ছিল না । কাজেই যত্ন করে শিখবার মনেও ছিল না । যে গুঁড় সে বানাত তা বাজারে বিক্রি হতো না । মতালোফের বদনাম ও লোকসান বাড়তে লাগল । একথা বললেও ফুলবানু গ্রাহ্য করে না । আয় করবার পথটা কে নিয়ে সে হেলা ফেলা করে । একদিন গুঁড় পুড়ে যাওয়ায় ধৈযচূর্ত মোতালেফ কঞ্চির কয়েক ঘা বসিয়ে দেয় তাঁর পিঠে । ফুলবাবু তালাক নিয়ে বাপের বাড়ী চলে যেতে চায় । এলেম শেখই তাকে বোঝায় বারবার ঘর বদল ভালো দেখায় না । মোতালেফ ফুলবানুর প্রণয় রস ক মাসের ব্যবধানে শুকিয়ে কাঠ ।
[ ] গল্পে ফুলবানুর পরিণতি দেখানো হয়নি । চরিত্রটি আসলে মোতালেদের চরিত্র বিকাশে সহায়ক হয়েছে । আলাদাভাবে আমাদের মন কাড়তে পারেনি । তুলনায় মাজু চরিত্র মনে দাগ কাটে । নায়ক মোতালেফ কে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিতে বিশ্বাসঘাতক হবার জন্য চালিত করতে ফুলবানুর বেশ একটা ভূমিকা আছে । আর কোনো ভূমিকা নেই । তাই ফুলবানুর প্রতি পাঠকের সহানুভূতি তেমন জাগে না ।
কোন মন্তব্য নেই