ভাতের গন্ধ বড় ভালো গন্ধ সাধনের এই ভাত প্রীতির কথা মনে রেখে তাঁর চরিত্রটি আলোচনা করো প্রশ্নোত্তর
উত্তর:- মহাশ্বেতা দেবী “ সাঁঝ সকালের মা ” গল্পের অন্যতম চরিত্র সাধনের কাছে ভাতের গন্ধ বড় ভালো গন্ধ । সে খানিকটা পেটুক । খিদে সহ্য করতে পারে না । খাও বেশি । তাঁর খাওয়ার খোরাক যোগার করত তার মা জটি ঠাকুরনী হয়েছিল । মানুষকে পাপ মুক্তির আশীর্বাদ করে , সান্ত্বনা দিয়ে , ওষুধ দিয়ে জটি ঠাকুরনী টাকা কড়ি নিত না , কেবল এক পালি করে চাল নিত । সেই চাল সে ছেলের জন্য রাঁধতে বসত রাতের বেলা । দিনের বেলা জটি সাধন কে কাছে আসতে বারণ করত । সাঁঝ থেকে সে হত সাধনের মা । মা যখন ভাত রাঁধত তখন পেটুক সাধন গরম ভাতের গন্ধ টাকেও উপভোগ করত ।
[ ] জটি অসুস্থ এবং মৃত্যু পথযাত্রী হলে সাধনের ভাত জোটেনি । জটি তাকে রেঁধে খাওয়াতে পারেনি । হাসপাতালে থাকার সময় সরল সাদা হাবাগোবা সাধন ডাক্তারবাবুকে বলেছে দিনের বেলা তার মা খায় না । তার মায়ের ভাগের ভাত টা যদি তাকে দেওয়া হয় । ডাক্তারবাবু নিয়ম ভেঙে সেটা করতে চাননি ।
[ ] জটি মারা যাবার পর সাধনের খাওয়ার সমস্যাটাই বড় হয়ে ওঠে । জটিকে ভক্তবৃন্দ চাল দিত । জটির অবর্তমানে চাল জুটবে কোথা থেকে ? জটির শ্রাদ্ধর যে চাল দেওয়া হয়েছিল , সেটা সাধন পুরোহিত কে না দিয়ে নিজে গুছিয়ে বেঁধে নিয়েছে । বলেছে “ চাল নিয়ে যাই , ভাত আধব ।” হরাদের চাল নিতে নেই বললেও সে শোনেনি । “ মত্ত হাতির মতো চেঁচিয়ে উঠল সাধন । বলল ঘরে কানাকড়ি লাই যে ই চাল কিনে আধব । চাল আমি হাত ছাড়া করি ।” চাল নিয়েই সে বাড়ি যায় । এতদিন মায়ের রাঁধা ভাতের গন্ধে সে তৃপ্ত হতো , আজ নিজের রাঁধা ভাতের গন্ধে সে তৃপ্ত হবে । একজন ক্ষুধার্ত , পেটুক মানুষের চরিত্রকে সার্থকতার সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সাধনের চরিত্রের মধ্যে দিয়ে ।
কোন মন্তব্য নেই